প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
আধার না থাকলে মিলবে না মিড-ডে মিলঃ
কেন্দ্রের আধার নীতির কাছে রাজ্য সরকারের নির্লজ্জ আত্মসমর্পনের তীব্র বিরোধিতা করছে খাদ্য ও কাজের অধিকার অভিযান পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রের ‘ আধার নেই, পরিষেবাও নেই’ এই নীতির অন্যতম নক্কারজনক সংযোজন ছিল মিড ডে মিল প্রকল্প যেখানে আধার লিঙ্কিং-কে এই প্রকল্পের আওতায় শিশুদের খাবার পাবার পূর্বশর্ত ধার্য করা হয়েছে। এই ধরনের শর্ত আরোপ সবসময়ই শিশুদের নুন্যতম খাদ্য ও পুষ্টির অধিকারের বিপক্ষে এবং আধার কার্ড নেই এরকম বাচ্চাদের কাছে শাস্তিস্বরূপ।
পশ্চিমবঙ্গ স্কুলশিক্ষা দপ্তরের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর গত ৬/১২/২০১৭-এ (মেমো নং- 522-ES(CMDMP)/MDMS-11/2017) একটি বিজ্ঞপ্তিতে সমস্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানাচ্ছেন ৩১ডিসেম্বরের মধ্যে আধার সম্বন্ধিত সমস্ত তথ্য জোগাড় করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাতেই হবে। কাজেই এটা বোঝা খুব শক্ত নয় যে কেন্দ্রীয় সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে অন্যান্য রাজ্যের মত এরাজ্যেও আধার লিঙ্কেজ না থাকলে খাবার দেওয়া বন্ধ করা।
মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট আধার সংক্রান্ত সর্বশেষ রায়ে মোবাইল, ব্যাঙ্ক, মিউচুয়ালফাণ্ড ইত্যাদির সাথে আধারলিঙ্কিং-এর সর্বশেষ তারিখ হবে ৩০শে মার্চ, ২০১৮। তা সত্ত্বেও প্রোজেক্ট ডিরেক্টর এই নির্দেশ প্রত্যাহার করেনি।
প্রসঙ্গত, আধার লিঙ্কিং সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিরোধিতা করে আসছিল এবং যার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল- ‘আধারলিঙ্কিং’ খুবই সমস্যাজনক| আধারের নাম করে মানুষের যাবতীয় বিবরণ অনলাইন ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে যা মানুষের ভাবনাচিন্তা প্রকাশের, সমাজের এবং দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, ২৫অক্টোবর তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির একটি মিটিং-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওঁরা (কেন্দ্র) আধারের নামে মানুষের অধিকার এবং ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করছে’| গত ৩০অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কেন্দ্রের সমস্ত সরকারি ও সামাজিক সুযোগসুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে আধার লিঙ্কিং-এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে| শুধু তাই নয় প্রায় ২১০ টি সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আধারের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর আধারের গ্রহণযোগ্যতা ও সাংবিধানিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল| সবথেকে জোরদার প্রতিবাদ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়| তথ্যফাঁসের সাথে সাথে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণে রাষ্ট্রের ভূমিকা ও প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই পরবর্তীকালে তাঁর সরকারের মিড ডে মিল প্রকল্পে আধার লিঙ্কিং নিয়ে এই দ্বিচারি পদক্ষেপ খুবই হতাশাজনক।
গত কয়েক মাসে ঝাড়খন্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটক থেকে প্রায় ১০টি অনাহারজনিত কারণে মৃত্যুর খোবোড় এসেছে এবং প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আধার লিঙ্ক না হওয়ার কারনে পরিবারগুলি রেশন পায়নি। বায়মেট্রিক জনিত সমস্যা বা আধার কার্ড না থাকার জন্য রাজস্থানে প্রায় ৩৩ লক্ষ মানুষের রেশন বন্ধ হয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ডের সিমদেগা জেলার সন্তোষী কুমারি কিভাবে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েছিল শুধুমাত্র খাদ্যের অভাবে যেহেতু আধার লিঙ্কি না হওয়ার কারণে ৬ মাস তার পরিবারকে রেশন দেওয়া হয়নি এবং দুর্গাপূজো থাকায় স্কুলও বন্ধ ছিল। ফলে মিড ডে মিলের খাবারটুকুও পায়নি মেয়েটি এবং মৃত্যুর আগে তার শেষ আর্তিও ছিল একটু ভাতের।
বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি আধার শাসন যত তীব্র হচ্ছে খাদ্যসুরক্ষার মত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগসুবিধাও(বার্ধক্য ভাতা) প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়তে চলেছে। এবং ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গেও আরও অনেক সন্তোষী কুমারি আমরা দেখতে পাব।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১৯ টি দেশের মধ্যে ১০০ র্যাঙ্ক করেছে ভারত। একটি সমীক্ষা সুত্রে জানা যায় বিশ্বের অপুষ্ট শিশুদের ৫০ শতাংশই ভারতে বসবাস করে(a joint study by Assocham and EY)। এই রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৫-এর শেষের দিকে ভারতের ৪০ শতাংশ শিশুই হবে অপুষ্টির শিকার। সেই দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গও খুব ভাল অবস্থায় নেই। ন্যাশানাল নিউতট্রিশান মনিটারিং ব্যুরেউ-এর পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল স্কুলে যাওয়া শিশুদের নিয়ে। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী ২৪,১০৮ জন ৬-১৩ বছরের বাচ্চার মধ্যে অপুষ্টির শিকার এরকম বাচ্চার সংখ্যাটা ছিল আশঙ্কাজনক(প্রায় ২৩%)। এবং অর্ধেকের বেশি ছাত্রছাত্রীর( প্রায় ৫৪%) অপুষ্টির শিকার হওয়ার সম্ভবনা ছিল। অন্যদিকে মাত্র ১৭% ছাত্রছাত্রী ছিল স্বাস্থ্যবান। সুতরাং সরকারের উচিত শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান করা, তাদের আধার সংক্রান্ত জটিলতায় পিষ্ট করে মারা নয়।
খাদ্য ও কাজের অধিকার অভিযান, পশ্চিমবঙ্গ দাবি জানায় যে জনস্বার্থে ও খাদ্য সুরক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের অধিকর্তার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে|
আধার না থাকলে মিলবে না মিড-ডে মিলঃ
কেন্দ্রের আধার নীতির কাছে রাজ্য সরকারের নির্লজ্জ আত্মসমর্পনের তীব্র বিরোধিতা করছে খাদ্য ও কাজের অধিকার অভিযান পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রের ‘ আধার নেই, পরিষেবাও নেই’ এই নীতির অন্যতম নক্কারজনক সংযোজন ছিল মিড ডে মিল প্রকল্প যেখানে আধার লিঙ্কিং-কে এই প্রকল্পের আওতায় শিশুদের খাবার পাবার পূর্বশর্ত ধার্য করা হয়েছে। এই ধরনের শর্ত আরোপ সবসময়ই শিশুদের নুন্যতম খাদ্য ও পুষ্টির অধিকারের বিপক্ষে এবং আধার কার্ড নেই এরকম বাচ্চাদের কাছে শাস্তিস্বরূপ।
পশ্চিমবঙ্গ স্কুলশিক্ষা দপ্তরের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর গত ৬/১২/২০১৭-এ (মেমো নং- 522-ES(CMDMP)/MDMS-11/2017) একটি বিজ্ঞপ্তিতে সমস্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানাচ্ছেন ৩১ডিসেম্বরের মধ্যে আধার সম্বন্ধিত সমস্ত তথ্য জোগাড় করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাতেই হবে। কাজেই এটা বোঝা খুব শক্ত নয় যে কেন্দ্রীয় সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে অন্যান্য রাজ্যের মত এরাজ্যেও আধার লিঙ্কেজ না থাকলে খাবার দেওয়া বন্ধ করা।
মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট আধার সংক্রান্ত সর্বশেষ রায়ে মোবাইল, ব্যাঙ্ক, মিউচুয়ালফাণ্ড ইত্যাদির সাথে আধারলিঙ্কিং-এর সর্বশেষ তারিখ হবে ৩০শে মার্চ, ২০১৮। তা সত্ত্বেও প্রোজেক্ট ডিরেক্টর এই নির্দেশ প্রত্যাহার করেনি।
প্রসঙ্গত, আধার লিঙ্কিং সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিরোধিতা করে আসছিল এবং যার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল- ‘আধারলিঙ্কিং’ খুবই সমস্যাজনক| আধারের নাম করে মানুষের যাবতীয় বিবরণ অনলাইন ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে যা মানুষের ভাবনাচিন্তা প্রকাশের, সমাজের এবং দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, ২৫অক্টোবর তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির একটি মিটিং-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওঁরা (কেন্দ্র) আধারের নামে মানুষের অধিকার এবং ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করছে’| গত ৩০অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কেন্দ্রের সমস্ত সরকারি ও সামাজিক সুযোগসুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে আধার লিঙ্কিং-এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে| শুধু তাই নয় প্রায় ২১০ টি সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আধারের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর আধারের গ্রহণযোগ্যতা ও সাংবিধানিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল| সবথেকে জোরদার প্রতিবাদ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়| তথ্যফাঁসের সাথে সাথে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণে রাষ্ট্রের ভূমিকা ও প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই পরবর্তীকালে তাঁর সরকারের মিড ডে মিল প্রকল্পে আধার লিঙ্কিং নিয়ে এই দ্বিচারি পদক্ষেপ খুবই হতাশাজনক।
গত কয়েক মাসে ঝাড়খন্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটক থেকে প্রায় ১০টি অনাহারজনিত কারণে মৃত্যুর খোবোড় এসেছে এবং প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আধার লিঙ্ক না হওয়ার কারনে পরিবারগুলি রেশন পায়নি। বায়মেট্রিক জনিত সমস্যা বা আধার কার্ড না থাকার জন্য রাজস্থানে প্রায় ৩৩ লক্ষ মানুষের রেশন বন্ধ হয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ডের সিমদেগা জেলার সন্তোষী কুমারি কিভাবে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েছিল শুধুমাত্র খাদ্যের অভাবে যেহেতু আধার লিঙ্কি না হওয়ার কারণে ৬ মাস তার পরিবারকে রেশন দেওয়া হয়নি এবং দুর্গাপূজো থাকায় স্কুলও বন্ধ ছিল। ফলে মিড ডে মিলের খাবারটুকুও পায়নি মেয়েটি এবং মৃত্যুর আগে তার শেষ আর্তিও ছিল একটু ভাতের।
বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি আধার শাসন যত তীব্র হচ্ছে খাদ্যসুরক্ষার মত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগসুবিধাও(বার্ধক্য ভাতা) প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়তে চলেছে। এবং ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গেও আরও অনেক সন্তোষী কুমারি আমরা দেখতে পাব।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১৯ টি দেশের মধ্যে ১০০ র্যাঙ্ক করেছে ভারত। একটি সমীক্ষা সুত্রে জানা যায় বিশ্বের অপুষ্ট শিশুদের ৫০ শতাংশই ভারতে বসবাস করে(a joint study by Assocham and EY)। এই রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৫-এর শেষের দিকে ভারতের ৪০ শতাংশ শিশুই হবে অপুষ্টির শিকার। সেই দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গও খুব ভাল অবস্থায় নেই। ন্যাশানাল নিউতট্রিশান মনিটারিং ব্যুরেউ-এর পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল স্কুলে যাওয়া শিশুদের নিয়ে। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী ২৪,১০৮ জন ৬-১৩ বছরের বাচ্চার মধ্যে অপুষ্টির শিকার এরকম বাচ্চার সংখ্যাটা ছিল আশঙ্কাজনক(প্রায় ২৩%)। এবং অর্ধেকের বেশি ছাত্রছাত্রীর( প্রায় ৫৪%) অপুষ্টির শিকার হওয়ার সম্ভবনা ছিল। অন্যদিকে মাত্র ১৭% ছাত্রছাত্রী ছিল স্বাস্থ্যবান। সুতরাং সরকারের উচিত শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান করা, তাদের আধার সংক্রান্ত জটিলতায় পিষ্ট করে মারা নয়।
খাদ্য ও কাজের অধিকার অভিযান, পশ্চিমবঙ্গ দাবি জানায় যে জনস্বার্থে ও খাদ্য সুরক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের অধিকর্তার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে|
Comments
Post a Comment